স্পোর্টস ডেস্কঃ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ৩ উইকেটে জিতেছে পাকিস্তান। রোববার রাতে বাবর আজমের দল আয়ারল্যান্ডের ১০৬ রান পেরিয়ে গেছে ৭ বল বাকি থাকতে। লডারহিলে ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে ৬২ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল পাকিস্তান।
অধিনায়ক বাবর আজম একপ্রান্ত আগলে রাখলেও পরাজয়ের শঙ্কা কিছুটা হলেও উঁকি শুরু করে। তবে আব্বাস আফ্রিদি আর শাহিন আফ্রিদি অধিনায়ক বাবরকে দারুণ সঙ্গ দেওয়ায় দ্রুতই শঙ্কা উড়ে গেল। ৩ উইকেটের জয়ে হতাশাময় বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করল পাকিস্তান। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে হেরে আসর শুরু করা সাবেক চ্যাম্পিয়নরা টানা দ্বিতীয় পরাজয়ের স্বাদ পায় ভারত ম্যাচে। এরপর কানাডা ম্যাচে জিতলেও যুক্তরাষ্ট্র-আয়ারল্যান্ডের লড়াই বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় বাদ পড়ে পাকিস্তান।
রোববার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আয়ারল্যান্ডকে শুরুতেই কোণঠাসা করে পাকিস্তানের পেসাররা। স্কোরকার্ড চালু হওয়ার আগেই আইরিশদের প্রথম উইকেট তুলে নেন শাহিন। অ্যান্ডি বালবির্নিকে (৩ বলে ০) বোল্ড করে দেন বাঁহাতি এই পেসার। ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে লরকান টাকারের উইকেটও তুলে নেন শাহিন। তখন আইরিশদের স্কোরকার্ডে মাত্র ২ রান। পরের ওভারে বল করতে এসে অধিনায়ক পল স্টার্লিংকে (২ বলে ১) সাজঘরের পথ দেখান মোহাম্মদ আমির। বাঁহাতি এই পেসারের বলে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ হন স্টার্লিং।
তৃতীয় ওভারে ফিরে হ্যারি ট্যাক্টরকে (০) এলবির ফাঁদে ফেলেন শাহিন। মাত্র ১৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন কাঁপছে আয়ারল্যান্ড তখনই ষষ্ঠ ওভারে আঘাত হানেন আমির। এবার তার শিকার ১০ বলে ১১ রান করা জর্জ ডকরেল। পরের ওভারেই হারিস রউফ ফেরান কার্টিস ক্যামফারকে (৭)। মাত্র ৩২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধ্বংস্তুপে পরিণত হয় আইরিশরা। ৬ষ্ঠ উইকেট গ্যারেথ ডিলানি ও মার্ক আডায়ারের ৩৫ রানের জুটিতে কিছুটা সামাল দেন। কিন্তু ডিলানিকে আউট করে এই জুটি ভাঙেন ইমাদ ওয়াসিম। আউট হওয়ার আগে মাত্র ১৯ বল ১ চার ও ৩ ছয়ে ৩১ রান করেন ডেলানি। ৩ রান যোগ হতেই ইমাদের শিকারে পরিণত হন মার্ক আডায়ার। শেষ দিকে জশ লিটল ১৮ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ২২ রান করেন। বেন হোয়াইট ২০ বলে ৫ রান করে তাকে সঙ্গ দেন। এতে করে ৯ উইকেটে ১০৬ রানে গিয়ে থামে ইনিংস।
পাকিস্তানের পক্ষে বল হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন শাহিন। ৪ ওভারে ২২ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট শিকার করে আয়ারল্যান্ডের টপ অর্ডার একাই গুড়িয়ে দেন। ইমাদ ওয়াসিম ৪ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। মোহাম্মদ আমির ৪ ওভারে ১১ রান দিয়ে একটি মেডেনসহ ২ উইকেট শিকার করেন। এছাড়া হারিস রউফ ১টি উইকেট শিকার করেন। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের হয়ে ২৩ রানের জুটি গড়েন সাইম আইয়ুব ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে আডায়ার আইয়ুবকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন। আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ১৭ রান করেন তিনি। পরের ওভারের পঞ্চম বলে বিদায় নেন রিজওয়ানও। ম্যাকার্থির বলে আউট হওয়ার আগে ১৬ বলে ১৭ রান করেন রিজওয়ান।
দলীয় ৫২ রানে ফখর জামান ক্যামফারের শিকারে পরিণত হন। পরের ওভারে বল করতে এসে এক বলের ব্যবধানে উসমান খান ও শাদাব খানকে বিদায় করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন ম্যাকার্থি। উসমান ২ রান করলেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি শাদাব খান। পাকিস্তানের রানের খাতায় আর পাঁচ রান যোগ হতেই পরের ওভারে সাজঘরে ফেরেন ইমাদ ওয়াসিম। ক্যামফারের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৪ রান করেন এই অলরাউন্ডার। হারের শঙ্কায় থাকা পাকিস্তানকে টানতে থাকেন অধিনায়ক বারব। তার সঙ্গী হন আব্বাস আফ্রিদি। এই জুটি ৩৩ রান যোগ করে জয়ের পথে নিয়ে আসেন পাকিস্তানকে। কিন্তু ২১ বলে ১৭ রান করা আব্বাসকে শিকার করে ম্যাচ ফের জমিয়ে তোলেন হোয়াইট। তবে ডেলানিকে লং অনে ছক্কা মেরে শাহিন আফ্রিদির ম্যাচ পাকিস্তানের নাগালে নিয়ে আসেন। তবে পরের বলেই ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান তিনি। স্লিপে তার ক্যাচ ফেলেন স্টার্লিং। সেই ওভারেই আরেকটি ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন শাহিন। বাবর আজম ৩৪ বলে ২ চারে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন। শাহিন ৫ বলে ২ ছয়ে করেন ১৩ রান।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০
Discussion about this post