স্পোর্টস ডেস্কঃ ২০১৭ সালের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে প্রথম ৬ ওভারে ১০৫ রান করেছিল। পাওয়ার প্লেতে এটিই ছিল টুর্নামেন্টটির রেকর্ড। সাত বছর পর শনিবার সেই রেকর্ড তো বটেই স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির পাওয়ার প্লেতে রান তোলার রেকর্ড ভেঙে দিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ১২৫ রান করে হায়দরাবাদ। এই ১২৫ রানের মধ্যে ট্র্যাভিস হেড ২৬ বলে ১১ চার ও ৬ ছক্কায় ৮৪ করেন। সঙ্গে হায়দারাবাদের আরেক ওপেনার অভিষেক শর্মা ১০ বলে ২ চার ও ৫ ছক্কায় করে ৪০ রান। পাওয়ার প্লে-তে রেকর্ডগড়া হায়দরাবাদ নির্ধারিত ওভার শেষে পায় ২৬৬ রানের পাহাড়সম পুঁজি।
হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ৯ ওভারের মধ্যে দলীয় ১৫৪ রান তুলে বিদায় নেন। এই রানে ভর করে হায়দরাবাদ ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রান করে। পাওয়ারপ্লে শেষ হলে দলীয় ১৩১ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। ১১ বলে ৪৬ রান করা অভিষেককে হাতছানি দিচ্ছিল দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি। পরের বলটি বাউন্ডারিতে পরিণত করলেই সেই রেকর্ডে নাম উঠে যেত ২৩ বছর বয়সী ভারতীয় এই অলরাউন্ডারের। কিন্তু ৬.২ ওভারে কুলদীপ যাদবের বলে তাকে সাজঘরে ফিরতে হয়। এই ওভারের শেষ বলে আরও একটি উইকেট পান কুলদীপ।
নবম ওভারের শেষ বলে হেডকে ফেরান কুলদীপ। ৩২ বলে ১১টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৮৯ রান করে মাঠ ছাড়েন অস্ট্রেলিয়ান তারকা। শুরুর ঝড়ের পরে কুলদীপের তিন আঘাতে রানের গতি অনেকটাই কমে আসে হায়দরাবাদের। ট্রাভিস-অভিষেকের মতো আর কেউ ঝড় তুলতে না পারলেও দলীয় রান গিয়ে দাঁড়ায় ২৬৬ তে। ৮ বলে ১৫ করেন হেনরিক ক্লাসেন, ২৭ বলে ৩৭ রান করেন নিতিশ কুমার রেড্ডি, ২৯ বলে অপরাজিত ৫৯ রান করেন শাহবাজ আহমেদ, ৮ বলে ১৩ রান করেন আব্দুল সামাদ। দিল্লির হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন কুলদীপ।
হায়দরাবাদের বিপক্ষে ২৬৭ রান তাড়ায় স্রেফ ১৫ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক।। চলতি আইপিএলে দ্রুততম ফিফটি এটি। এই ম্যাচেই প্রথম ইনিংসে ১৬ বলে ফিফটি করেন হায়দরাবাদের হেড। কিছুদিন আগে সমান বলে ফিফটি করেন তার সতীর্থ অভিষেক। দিল্লির হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড এখন ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের। ২০১৬ আসরে ক্রিস মরিসের ১৭ বলে ফিফটি ছিল দলটির আগের রেকর্ড। ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের চেয়ে কম বলে আইপিএলে ফিফটি আছে আর কেবল তিন জনের।
গত আসরে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে রেকর্ড ১৩ বলে ফিফটি করেন যস্বভী জয়সওয়াল। ২০২২ আসরে কলকাতার হয়ে প্যাট কামিন্স ১৪ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে। ২০১৮ আসরে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে লোকেশ রাহুল সমান বলে ফিফটি করেছিলেন দিল্লির বিপক্ষে। ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ছাড়া ১৫ বলে ফিফটি আছে আরও তিন জনের- ইউসুফ পাঠান, নিকোলাস পুরান, সুনিল নারাইন। এদিকে শনিবার ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের মাইলফলকের ম্যাচে জেতা হয় নি দিল্লির।
ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ৩ বলে ১ রান করে ফেরেন। এর আগে ইনিংসের শুরুটা দারুণ করেন পৃথ্বী শ্ব। ৫ বলে ৪ চারে ১৬ রান করেন এই ডানহাতি। তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ও অভিষেক পোরেল। ১৮ বলে ৬৫ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলে বিদায় নেন ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক। ৫টি চার ও ৭টি ছক্কায় সাজানো ইনিংস থামলে জয়ের আশাও কমে যায়। শেষপর্যন্ত পোরেলের ২২ বলে ৪২ ও রিশভ পান্টের ৩৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংস শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমাতেই সক্ষম হয়েছে। ১৯.১ ওভারে ১৯৯ রানে অলআউট হলে ৬৭ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দিল্লি। থাঙ্গারাসু নটরাজন একাই শিকার করেন চারটি উইকেট। এ জয়ে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে গেছে হায়দরাবাদ। সাত ম্যাচের ৫টিতে জেতা দলটির ওপরে আছে শুধু রাজস্থান রয়্যালস (৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট)। অন্যদিকে অষ্টম ম্যাচে পঞ্চম হারের স্বাদ পেল দিল্লি।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০
Discussion about this post