নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম গ্রাউন্ড দুইয়ে তখন প্রখর রোদ। ভরদুপুরে অনুশীলন শুরু ফরচুন বরিশালের। মাঠের পাশের লাগোয়া মূল স্টেডিয়ামে তখন চলছিল ঢাকা ডমিনেটর্স ও রংপুর রাইডার্সের মধ্যকার ম্যাচ।
এদিন অনুশীলনে সবার মধ্যমণি সাকিব আল হাসান। সাকিব অনুশীলনও করেন, চলতি বিপিএলে এটা অন্যতম অবাক করা বিষয়ের একটি হয়তো! এই রৌদ্রতাপের মধ্যেও শুরুতেই গা গরমের ফুটবলে মত্ত হয় পুরো দল। তবে উপস্থিত গণমাধ্যমের ক্যামেরার লেন্স শুধুই সাকিবের দিকেই তাক করা। পেশগত তাগিদে আসা একেকজন কার আগে কে কত ‘এক্সক্লুসিভলি’ কাভার করবেন, সেটারই ঠাণ্ডা লড়ায়ই হচ্ছিল।
অনুশীলনে ফেরা যাক। ভর দুপুরের সেই ফুটবলে গোলের সুযোগ মিস করে, সাকিবকে রগান্বিত হতে দেখা যায়। সব খানেই সেরা হওয়া যার নেশা, তার কাছে এমনটা স্বাভাবিকই যেন। তবে শেষ পর্যন্ত গোল হয়েছে। মাহমুদউল্লাহ-মিরাজদের বিপক্ষে সাকিবের এসিস্ট থেকে সেই গোল করেন ফজলে রাব্বি।
এসিস্ট করেই সবুজের আবরণে থাকা দৃষ্টিনন্দন গ্রাউন্ডে বসে পড়েন। খানিকটা ক্লান্ত দেখাচ্ছিল এই তারকাকে। আর তখনই তাঁর কাছে আসেন দলের ভারত থেকে আসা দলের অ্যানালিস্ট লক্ষী নারায়ণ। সেই শুরু, গ্রাউন্ডে বসলেন দীর্ঘক্ষণ, এরপর চলে আসলেন ডাগআউটে বসার স্থানে। রৌদ্রতাপ সহ্য করতে পারছিলেন না স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল। ওই দিকে ফুটবল সেশন সমাপ্ত হয়ে মূল অনুশীলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন বাকি সদস্যরা।
ডাগআউটে বসে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন সেই ব্যাঙ্গালোর থেকে আগত লক্ষী নায়ারণের সাথে। মোবাইল বের করে ঘাঁটতে দেখা যায় দুজনকেই। খানিক পর সেই অ্যানালিস্ট উঠে যান, দলের ম্যানেজম্যান্টের একজনের সাথে কথা বলেন। ফের আবার সাকিবের সাথে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন।
দলের অন্যান্য সদস্যরা যখন অনুশীলনে ব্যস্ত, তখন তাদের মধ্যে ঠিক কী নিয়ে কথা হচ্ছিল সেটা বোঝার উপায় ছিল না। তবে ঘন্টা খানেক সেই সেশন যে গুরুত্বপূর্ণ কিছুই যে হবে, সেটা আন্দাজ করা যাচ্ছিল বেশ। দীর্ঘ আলাপ শেষে ড্রেসিং রুমের দিকে রওনা দেন সাকিব।
এরপর আবার ফিরে এসে ধীর-স্থিরভাবে বোলিং করতে থাকেন। যখন সতীর্থরা বড় বড় ছয় হাঁকাচ্ছিল, এমনকি পাকিস্তানের ওয়াসিম জুনিয়রও ছয় হাঁকান খানিকটা হতাশই দেখা যায় এই অলরাউন্ডারকে। এরপরই জোর লাগিয়ে বোলিং শুরু করেন। বেশ কিছু বল যে ক্যাচ উঠবে, সেটা ভেবে সাকিবের চোখে-মুখেও অনেকটা স্বস্তির আলো-রেখা।
দলের অনুশীলন শেষ, সবাই ব্যস্ত নিজেদের মতো করে ব্যাগ গোছাতে। চলে যাওয়ার প্রস্তুতিতে যখন মগ্ন সবাই, তখন সাকিব ব্যাট-প্যাড নিয়ে তৈরি হচ্ছিলেন ব্যাটিং অনুশীলনের জন্য। সবাই মাঠ ছেড়েছেন, টিম বাসে করে রওনা দিয়েছেন হোটেলের দিকে। কিছু সদস্য থেকে গিয়েছিলেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে সহযোগীতা করতে।
পড়ন্ত বেলায়, সাকিব অগ্নিমূর্তি ধারণ করার চেষ্টা করেন ব্যাট হাতে। থ্রোয়ারদের ছুঁড়া বল সজোরে হাঁকাচ্ছিলেন। আউটার স্টেডিয়ামের সবুজে মোড়ানো গ্রাউন্ডে আছড়ে পড়ছিল একেকটি বল। তবে তাতে সন্তুষ্টি হওয়ার উপায় নেই। কেননা আউটের সম্ভাবনাই বেশি ছিল। পাওয়ার হিটিংয়ের মোক্ষম অনুশীলন হয়নি। একান্তে অনেক সময় ব্যাট করে অনেকটা অস্বস্তিতে ছাড়লেন মাঠ।
তবে অনুশীলন জুড়েই ‘সিরিয়াস’ সাকিব। সাকিবকে সবার থেকে ব্যতিক্রম ভাবা হয়, বিশ্বসেরাদের তো ব্যতিক্রমই হতে হয়। ও বলা হয়নি, মাঠ ছাড়ার আগে সাকিব দেখে গিয়েছিলেন আবার সন্ধ্যায় মাশরাফী-তামিমদের ম্যাচও।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা
Discussion about this post